বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে অনেক সহজ করেছে এবং করেছে আরো গতিময়। মানুষের ঘুম থেকে উঠার পর থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত সমস্ত কিছুই এখনো প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে। আর সেই প্রযুক্তির একটি বড় অংশই হলো এই স্মার্টফোনের / Mobile আবিষ্কার। আর এই স্মার্টফোনে থাকছে মানুষের দৈনন্দিন কর্ম কর্মকাণ্ড এবং ব্যক্তিগত জীবনের সকল তথ্য। তাই এই ফোনটি যদি হারিয়ে গেলে এবং চুরি বা ছিনতাই হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে অনেক প্রকার হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। তাই নিচে মোবাইল হারিয়ে গেলে কি করণীয় এমন কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
সিম ব্লক (Sim Block) করুন :-
বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন চুরি বা হারিয়ে গেলে সর্বপ্রথম আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হলো, টেলিফোন অপারেটর এর হেল্পলাইনে নাম্বার অথবা আপনি যে কোম্পানির সিম ব্যবহার করেন তার নিকটস্থ সে সিমের যদি কোন অফিস থাকে সেখানে গিয়ে আপনার সিম টি ব্লক করুন। কেননা আজকাল এই স্মার্টফোনের মধ্য দিয়েই আর্থিক লেনদেনের অনেক কাজ করা হয়। স্মার্টফোনে আসা ওটিপি (One Time Password) মোবাইল নাম্বারে আসে। তাই খুব দ্রুত তার সাথে হেল্পলাইন অথবা কাস্টমার কেয়ার থেকে আপনার সিমটি রিপ্লেস করুন। তারপর আপনি আপনার একাউন্ট টি পুনরায় সচল করে কাজ করুন। এটি হবে আপনার সর্বপ্রথম কাজ।
দেখে নিন : কিভাবে ব্যবহার করলে আর হবে না Facebook/ফেসবুক আইডি হ্যাক
মোবাইল ব্যাংকিং (Mobile Banking) সেবা বন্ধ করুন :-
মোবাইল ব্যাংকিং এ ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করুন। ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ারের ফোন করে খুব দ্রুততার সাথে আপনার মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে যদি কোন ব্যাংকিং সার্ভিস দেওয়া তাহলে সেগুলো তাৎক্ষণিক ভাবে স্থগিত করে রাখুন। আপনার ব্যাংকিং অ্যাক্সেস কারো হাতে চলে যেন না যায় তার জন্য খুব দ্রুততার সাথে ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তারপর আপনার সিমটি রিপ্লেস করা হলে আপনার নিকটস্থ ব্যাংকের ব্রাঞ্চে গিয়ে আপনার ব্যাংক একাউন্টে মোবাইল নম্বরটি পুনরায় আপডেট করুন। তারপর সমস্ত পাসওয়ার্ড রিসেট বা মুছে ফেলে নতুনভাবে ইন্টারনেট ব্যাংকিং চালু করুন এবং অবশ্যই একটি কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন ।
থানায় জিডি বা রিপোর্ট করুন :-
চুরি বা ছিনতাই অথবা হারিয়ে যাওয়া কোনটিকে খুঁজে পেতে আপনাকে নিকটস্থ থানায় জিডি অথবা রিপোর্ট করতে হবে। কেননা স্মার্টফোনে থাকা যে সিম কার্ডটি থাকে সেটি ব্যবহার করে অপরাধকারীরা নানা প্রকার বাজে অপরাধে লিপ্ত হতে পারে। আর কেউ যদি কোন অপরাধ করে সেই অপরাধের দায়ভার আপনার অজান্তেই চলে আসবে আপনার উপর।
নিজের নামে নিবন্ধিত :-
আপনার ফোনে যে সিম টি ব্যবহার করবেন সেটি অবশ্যই আপনার নিজের নামে নিবন্ধিত থাকলে আপনার যে কোন প্রকার আইনি সহায়তা পেতে খুব সাহায্য করবে।
সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ও ইমেইল ব্লক করুন-
ফোনে থাকা যত প্রকার সোশ্যাল মিডিয়াতে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। যেমন, ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর পাসওয়ার্ড বা ইমেইল চেঞ্জ করুন বা ডিএক্টিভেট করে রাখুন। যার ফলে চুরি হয়ে যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়া ফোনটি তে লগইন করা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ব্যবহার করা যাবে না বা ঢোকা যাবে না। এতে কেউ আপনার আইডি যেয়ে কোন প্রতারণা বা অসামাজিক কার্যক্রম করতে পারবে না।
আপনি হারিয়ে যাওয়া স্মার্টফোন টি চুরি হলে সেটি খোঁজা বা তার অবস্থান জানার জন্য গুগল একাউন্টটের (Google Account) সাহায্য নিতে পারেন:
- প্রথমে কোনো মোবাইল এবং কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থেকে গুগলে গিয়ে সার্চ করুন Find My Phone (ফাইন্ড মাই ফোন) লিখুন।
- তারপর হারিয়ে যাওয়া মোবাইলটি যে গুগল অ্যাকাউন্ট লগইন করা ছিল সেই একাউন্ট টি সাইন ইন করুন।
- গুগল একাউন্ট টি সাইন ইন করার পর Google আপনাকে আপনার ডিভাইসের সর্বশেষ অবস্থান জানিয়ে দেবে।
- আপনার ফোনের অবস্থান জানার পর আপনি চাইলে তা দূরে থেকে কল দিতে পারেন। তার জন্য Play Sound অপশনে ক্লিক করতে হবে আপনাকে। ফোনটি যদি সাইলেন্ট বা Vibrate মোডে থাকলেও ফুল ভলিউমে শব্দ হবে।
- তবে চুরি হয় ফোনটি তে শব্দ না করে স্মার্টফোন টি দূর থেকে ফোনটি লক করে দেওয়া উত্তম হবে।
আপনাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে উপরে উল্লিখিত অপশনটি অর্থাৎ ” Find My Phone ” অপশনটি সুদ মাত্র মোবাইল ফোন অন থাকলে এবং ওই ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ চালু থাকতে হবে।
বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন হলো আমাদের স্মার্ট ওয়ালেট এর মত। কেননা বর্তমান সময়ে এই স্মার্টফোনের মধ্যে আমাদের সকল প্রকার ব্যাংকের হিসাব , ব্যাঙ্ক ডিটেলস, ব্যক্তিগত তথ্যাদি, ই-মেইল আইডি, ফেসবুক একাউন্ট, ইনস্টাগ্রাম আইডি থেকে শুরু করে আরো অনেক বিষয় থাকে। যদি কোন কারণে আপনার এই স্মার্টফোনটি চুরি বা হারিয়ে যায়। তাহলে আমাদের শেয়ার করা টিপস গুলো অবশ্যই ফলো করবেন।
দেখে নিন : Android Phone Battery বা স্মার্টফোনের ব্যাটারি ভালো রাখার কিছু উপায়