কিছু প্রশ্ন রয়েছে Broadband Internet Connection বা ব্রডব্যান্ড সংযোগ বা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইন নেওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জেনে নেওয়া উচিত :
বর্তমান যুগ হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির যুগ। ধীরে ধীরে আমরা “ডিজিটাল বাংলাদেশ” এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ইন্টারনেট হলো তথ্য প্রযুক্তির সবথেকে বড় অবদান । আর, ইন্টারনেট এর আসল মজা পেতে হলে আপনাকে ব্রডব্যান্ড সংযোগ ব্যবহার করতে হবে। যারা আগে কখনো ব্রডব্যান্ড লাইন ব্যবহার করেন নি বা সামনে যারা ব্রডব্যান্ড সংযোগ ব্যবহার করতে যাচ্ছেন তাদের জন্যই অনেক প্রয়োজনীয় এই পোষ্টটি ।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট স্পিড নির্বাচন :
সর্বপ্রথম সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কত মেগা বাইটের স্পিড প্যাকেজটি নিবেন । নিয়মিত কয়জন ইন্টারনেট ব্যবহার করবে এবং আপনি কি কি কাজ করতে চান । সাধারণত দেখা যায় বাসায় ব্রডব্যান্ড সংযোগ বা লাইন নেয়ার পর ঐ বাসার প্রায় সবাই মোটামুটি WiFi বা রাউটার এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে।বর্তমানে বাংলাদেশে 1Mbps থেকে শুরু করে 100Mbps পর্যন্ত নেট কানেক্টশন পাওয়া যায়। Mbps যত বেশি হবে তত দ্রুত ব্রাউজিং, ডাউনলোডিং এবং আপলোডিং করা যাবে। আপনি যদি একা ব্যবহার করেন তাহলে 1Mbps হলেও হয়। যারা গেম খেলেন তারা 2Mbps এবং 5Mbps এর লাইনে আপনি PUBG তে ৬০/৭০ পিং পাবেন। আর,যদি ৪ জন ব্যবহারকারীর থাকে একটি বাসাতে তাহলে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ৫ কিংবা ৮ Mbps লাইন হলেই যথেষ্ট। নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মোট সংখ্যার উপর ভিক্তি করে ইন্টারনেট স্পিড প্যাকেজটি বাছাই করুন । আর ইন্টারনেটের স্পিডের উপরই মাসিক বিল নির্ভর করে।
ফাইবার ক্যাবল নাকি কপার ক্যাবল :
এবার আসি ক্যাবল নির্বাচনের দিকে। আমাদের দেশে মূলত দুই ধরণের ইন্টারনেটের কানেক্টশন ক্যাবল পাওয়া যায়।। একটি হচ্ছে ফাইবার ক্যাবল অপরটি হচ্ছে কপার ক্যাবল বা CATলাইট। কপার ক্যাবলে একটি নিদির্ষ্ট স্পিড লিমিট থাকে। আপনি যদি ৫০Mbps এর স্পিডের ইন্টারনেট কানেক্টশন নিতে চান তাহলে আপনাকে বাধ্যতামূলকভাবে ফাইবার ক্যাবলই নিতে হবে তাই কপার ক্যাবলকে নরমাল ক্যাবেল বলা হয় । আর, অপনি ফাইবার ক্যাবলে ব্যবহার করলে কারেন্ট চলে গেলেও ইন্টারনেট সংযোগ পাবেন কারণ ফাইবার ক্যাবলে আলোর মাধ্যমে আপনার পিসিতে ইন্টারনেট সার্ভিস দিয়ে থাকে। তবে ফাইবার ক্যাবলের দাম তুলনামুলকভাবে বেশি।
কানেক্টশন রেশিও :
কিছু কিছু ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারি কোম্পানি গুলো তাদের প্যাকেজে অফ আওয়ার ও পিক আওয়ার সেট করে রাখে । যেমন, সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ইন্টারনেট স্পিড 2 Mbps থাকে। আবার রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত নেট স্পিড 5Mbps থাকে। আর, এইরকম প্যাকেজ গুলোর মাসিক বিল তুলনামূলক কম । এই রকম প্যাকেজ নিতে চাইলে আপনার কাজের উপর মিল রেখে নেওয়া তাই উত্তম ।
ইন্টারনেটের ডাউনলোড ও আপলোড স্পিড :
Internet Service Provider বা ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারি কোম্পানির প্যাকেজ গুলোতে যে স্পিড দেওয়া থাকে তা আসলে ডাউনলোড স্পিড লেখা থাকে। প্রায় ৯৫% ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারি কোম্পানির প্যাকেজ গুলোতে আপলোড স্পিড লেখা থাকে না। অনেকেই ভাবে আমি তো কিছুই আপলোড করি না আমার বেশি আপলোড স্পিডের দরকার নেই । আর, আপলোড স্পিড ভালো না হলে গেম খেলতে গেলে দেখবেন ২০Mbps এর লাইনেও ২০০/২৫০ পিং পাবেন । তাই একটি ইন্টারনেট কানেক্টশনে ডাউনলোড স্পিডের পাশাপাশি আপলোড স্পিডেরও সমান প্রয়োজন রয়েছে।
ওয়াইফাই স্পিড কত হলে ভালো এবং উত্তম রাউটার নির্বাচন :
বাসার সব ডিভাইসে একসাথে ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য একটি রাউটারের প্রয়োজন । অনেকেই ভালো স্পিডের ইন্টারনেট লাইন নিয়ে কমদামি রাউটার ব্যবহার করে যার ফলে বাসার সবাই যখন এক সাথে ইন্টারনেট ব্যবহার করে তখন সকল ডিভাইসে ভালো স্পিড পাওয়া যাই না । তাই উত্তম রাউটার ব্যবহার করা উচিত কেননা রাউটারের মাধ্যমেই আপনার ডিভাইসে ইন্টারনেট কানেক্টশন আসে । তাই রাউটার কেনা সময় উত্তম ও দামি রাউটার কেনা উচিত। বর্তমানে বাজারে আপনি ৮০০ টাকায় ১ এন্টিনা রাউটার পেয়ে যাবেন । তবে আমি বলবো এমন রাউটার কিনবেন যাতে ২/৩/৪টি এন্টেনা থাকে। কিন্তু রাউটারের এন্টেনা নিয়ে অনেকেরই একটি ভূল ধারণা রয়েছে অনেকেরই ভাবে যে যত বেশি এন্টিনা থাকবে রাউটারটির WiFi সিগন্যাল তত দূর পর্যন্ত পাওয়া যাবে। আসলে এন্টেনার উপর রাউটারের WiFi এর Simontinously User স্পিড নির্ভর করে।আপনার বাসায় যদি ৫ জন এর উপরে নেট ইউজার থাকে তাহলে আপনার ২ এন্টেনা সহ রাউটারে ব্যবহার করাটাই উত্তম এতে সবাই সমান স্পিড পায় ।
রাউটারের সঠিক স্থানে নির্বাচন :
রুমগুলোর মাঝামাঝি স্থানে রাউটারকে রাখুন। এতে বাসার সবগুলো রুমে ভালো সিগন্যাল পাবেন । তবে দেয়ালে রাউটারের সিগন্যালটি বাধাগ্রস্থ করে । এই জন্য অনেকেরই বাসার বাইরের রাস্তারও রাউটারের ভালো সিগন্যাল পাওয়া যায় কিন্তু বাসার ভেতরের কিছু রুমে রাউটারের সিগন্যাল অনেক খারাপ থাকে। তার প্রদান কারণ হচ্ছে দেয়াল কিন্তু যারা উপরেরটিনশেডের ছাঁদ ওদের এই সমস্যাটি হয় না।
শক্তিশালি Wi-Fi পাসওর্য়াড ব্যবহার করুন :
সব সময় সহজেই অনুমান করা যায় না এবং শক্তিশালি একটি Wi-Fi পাসওর্য়াড ব্যবহার করুন । আর আপনার রাউটার কনফিগার পেজেরও পাসওর্য়াড অবশ্যই অবশ্যই পরিবর্তন করে রাখুন। মানে আপনি যে পেজে গিয়ে আপনার ওয়াইফাই পাসওর্য়াড সেট করেন সেই পেজের, আর অনেক রাউটারের এড্রেসটি ১৬৮.০.০.১ হয় তবে রাউটার ভেদে এড্রেসটি ভিন্ন ও হয় ।
নিয়মিত পরিস্কার করুন :
কম্পিউটার ও রাউটার কে সব সময় পরিস্কার করে রাখবেন এবং কম্পিউটার রুমে ধুমপান থেকে বিরত থাকুন। আর সব সফটওয়্যার কে নিয়মিত আপডেট করে নিবেন।