Chakri Seba

তথ্য প্রযুক্তি কি ও নৈতিকতা || What is Information technology and ICT Ethics

Information technology

তথ্য প্রযুক্তি কি ও তথ্য প্রযুক্তির নৈতিকতা || What is Information technology and ICT Ethics:

মানুষের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি একটি অতি প্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য অধিকার হলো তথ্য জানার অধিকার। বর্তমান সময়ে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপেই বিভিন্ন তথ্য জানা, পাওয়া এবং তা ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। ফলে এত সকল তথ্য কোনো ব্যক্তির পক্ষেই সংরক্ষণ করা সম্ভবপর হয় না। এজন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উপযুক্ত সময়ে সঠিক তথ্য সংগ্রহ, সত্যতা বা বৈধতা যাচাইকরণ, সংরক্ষণ, সংযোগস্থাপন, আধুনিকীকরণ, প্রক্রীয়াকরণ, পরিবহন, বিতরণ ও শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এ যাবতীয় কাজ নিশ্চিত করার প্রক্রীয়াকেই তথ্য প্রযুক্তি (Information Technology বা সংক্ষেপ  IT) বলা হয়।

বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির (ICT) বহুল ব্যবহারের ফলে সৃষ্টি হয়েছে নানান জটিলতার ও বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ডের। এসকল সমস্যা এড়ানোর লক্ষ্য কিছু নৈতিক বিষয়াবলী মেনে চলতে হবে। 

কম্পিউটার ব্যবহারে নৈতিকতা বিষয়ে ১৯৯২ সালে কম্পিউটার ইথিকস্ ইনস্টিটিউট কর্তৃক তৈরীকৃত ১০ টি নির্দেশনা র‌্যামন সি. বারকুইন তার In pursuit of a ten commandment’s for Computer ethics গবেষণাপত্রে উপস্থাপন করেছিলেন৷ ১০টি নির্দেশনা নিম্নরূপ:

 ১)অন্যের ক্ষতি করার লক্ষ্যে কম্পিউটার ব্যবহার না করা৷

২)অন্যের কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় এমনভাবে কম্পিউটার প্রযুক্তিকে ব্যবহার না করা৷

৩)অন্যের কম্পিউটারের তথ্য সংগ্রহ বা তথ্যের উপর নজরদারি না করা৷

৪)অন্যের অনুমতি ছাড়া কম্পিউটারের  রিসোর্স ব্যবহার না করা৷ 

৫)অন্যের বুদ্ধিদীপ্ত বা গবেষণালব্ধ ফলাফলকে নিজের মালিকানা বলে দাবি না করা৷ 

৬)তথ্য চুরির উদ্দেশ্যে কম্পিউটার ব্যবহার না করা৷

৭) মিথ্যা তথ্য প্রচার কাজে কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার না  করা।

৮) যেসব সফটওয়্যার ব্যবহারের  জন্য অর্থ প্রদান করতে হয়  সেগুলো অর্থ প্রদান ব্যতীত ব্যবহার বা কপি না করা৷

৯) প্রোগ্রাম তৈরী সময়  সমাজের উপর তা কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে সেটি বিবেচনা করা৷ 

১০) কম্পিউটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে পারস্পারিক  সম্মান ও সৌজন্য প্রদর্শন করা৷ 

এগুলো মেনে চলার পাশাপাশি আরো একটি বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে,সেটি হলো সাইবার অপরাধ বা সাইবার ক্রাইম।

সাইবার অপরাধ (CyberCrime):

ভারচুয়াললি ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমে সৃষ্ট অপরাধকেই সাইবার অপরাধ বলা হয়। কয়েকটি সাইবার অপরাধ নিম্নরূপ:

  • স্প্যামিং: ইন্টারনেট ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক সিস্টেমের  মাধ্যমে  ব্যাপকভাবে অপ্রত্যাশিত,অপ্রয়োজনীয়, আপত্তিকর বা উদ্দেশ্যমূলক কোনো বার্তা প্রেরনকে স্প্যামিং বলে।
  • হ্যাকিং: অনুমতি ছাড়া অন্যের  কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে অন্যের কম্পিউটারের তথ্য ব্যবহার করা বা পুরো  সিস্টেমকে নিজের  আওতায়  নিয়ে নেওয়াই হলো হ্যাকিং।
  • ভাইরাস আক্রমণ :  ভাইরাস হলো এক ধরনের ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম যা কোনো কম্পিউটারে প্রবেশ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সমূহ দখলে নিয়ে নেয় বা ক্ষতি সাধন  করে  এবং ক্রমে ক্রমে  নিজের সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে  ক্ষমতারও বৃদ্ধি করে।

১৯৮০ সালে University of New Haven এর Fred Cohen নামক একজন অধ্যাপক এ ভাইরাস (Virus) নামটি উল্লেখ  করেন। যার পূর্ণরূপ হল- Vital information Resources Under Siege.

  • সাইবার স্টকিং: কোনো ব্যক্তির সামাজিক যাবতীয় পরিচয় জেনে ইন্টারনেটে তাকে অনবরত অনুসরণ করে বিভিন্ন ইমেইল বা কুপ্রস্তাব পাঠিয়ে বিরক্ত করাকেই সাইবার স্টকিং বোঝায়।
  • ফিসিং এবং স্পুফিং: চুরি করে অন্যের অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন তথ্য, ছবি,মেইল পাঠানো কে স্পুফিং বলে।

বিশেষ কোনো সংস্থার নাম করে বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়াকে ফিসিং বলা হয়।

  • Plagiarism : অন্যের রচিত বা পরিক্ষালব্ধ কোনো তথ্য নিজের নামে ব্যবহার করা।

এছাড়াও রয়েছে লজিক বম্ব এবং ই-মেল বম্বিং,আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ,প্রতারণা, হুমকি প্রদর্শন,Software Piracy নামক বিভিন্ন অপরাধ। 

সবাই সচেতন হোন, সাইবার অপরাধকে ‘না’ বলুন,এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নৈতিকতা মেনে চলুন।

 

Leave a Comment